গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি সামরিক হামলায় অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯২ জনকে গুলি করে মারা হয়েছে। তারা বিভিন্ন স্থানে খাদ্য সহায়তা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সোমবার (২১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা মেহের।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর গাজার জিকিম চেকপয়েন্টে সহায়তা গ্রহণের অপেক্ষায় থাকা ৭৯ জন ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ ও শিশুকে গুলি করে হত্যা করে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী। অন্যদিকে দক্ষিণে রাফাহ ও খান ইউনিসে খাদ্য বিতরণ পয়েন্টে নিহত হয়েছেন আরও ১৩ জন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগগুলো অভূতপূর্ব সংখ্যক অনাহারী মানুষের চাপে উপচে পড়ছে। সেখানে রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা।
গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসন ও টানা অবরোধের পর চলতি বছরের শুরুতে একটা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে কিছুটা স্বস্তি পায় ফিলিস্তিনিরা।তবে মার্চের শুরুতেই আবার হামলা চালানো শুরু করে ইসরাইল এবং গাজার ওপর সম্পূর্ণ অবরোধ চাপিয়ে দেয়।
ইসরাইলি অবরোধের মুখে ২০২৫ সালের ২ মার্চ থেকে গাজা উপত্যকায় কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারেনি।
পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবরোধ কিছুটা শিথিল করে নেতানিয়াহুর সরকার। তবে ইসরাইলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব চেকপয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং খাদ্য সহায়তা বিতরণ চলছে একটি বিতরণ পয়েন্ট-নির্ভর ব্যবস্থার মাধ্যমে, যা পরিচালনা করছে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথভাবে গঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফান্ড (জিএইচএফ)।
তবে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো জিএইচএফ-এর এই বিতরণ পয়েন্টগুলোকে ‘মানব জবাইখানা’ ও ‘মৃত্যুকূপ’ বলে অভিহিত করেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শেষ থেকে অর্থাৎ জিএইচএফের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে অন্তত ৯০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ মে থেকে ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অব্যাহত ইসরাইলি আগ্রাসনে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৫৮,৮৯৫ ছাড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ১,৪০,৯৮০ ফিলিস্তিনি।